Header Ads

Header ADS

ইউনিকোড ফন্টের জনপ্রিয়তা ও ব্যবহার

 


ইউনিকোড ফন্টের জনপ্রিয়তা ও ব্যবহার

আজ মুদ্রণ জগতে ‘ইউনিকোড’ কথাটি আর তেমন অপরিচিত নয়। একদমই নয়। বরং অনেকক্ষেত্রেই একদম নির্দিষ্টভাবে বলে দেওয়া হয় যে, ‘ইউনিকোড’ ফন্টেই করতে হবে। আর কেনই বা বলবে না, ইউনিকোড ফন্টে করা যে কোন কাজই যখন সমস্ত সোস্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে কম্পিউটার, মোবাইল, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ প্রভৃতি বিভিন্ন ডিভাইসে সরাসরি দেখা ও পড়া যায়।এত সুবিধা তো ‘ইউনিকোড’ ছাড়া অন্য কোনখানে পাওয়া যায় না।বর্তমানে ইউনিকোড-এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ার বহু কারণ আছে।অজস্র ফ্রি ফন্ট, ফ্রি সফটওয়্যার। হাতের নাগালে যদি বাংলা টাইপ করার জন্য সমস্ত উপকরণই মজুত থাকে কেনই বা তার ব্যবহার দিন দিন বাড়বে না।

বেশিদিন নয়, আট-দশ বছর আগেও হাতে গোনা গোটা কয়েকটা মাত্র বাংলা ফন্ট ব্যবহার হত।যে সফটওয়্যার ছিল সেটা যে একেবারে ফ্রি তা বলা যাবে না।সফটওয়্যারের কথা বললেই যে যেমন পারত টাকা নিত।দরকষাকষি চলত।বাংলা টপটাইপ। ফন্টের নাম ছিল সমিত এটিএম লাইট আর বোল্ড ফন্ট। পরে এর সাথে আরও কিছু ফন্ট যুক্ত হয়েছিল যেমন, রবীন্দ্র, বিদ্যাসাগর ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে এটা কিন্তু ইউনিকোড ছিল না।

আজকের মূল যে বিষয় সেটা হচ্ছে কোন সফটওয়্যার দিয়ে ইউনিকোড টাইপ করব। অবশ্যই প্রফেশন্যাল ভাবে।আমাদের কী ইউনিকোডে টাইপ করার জন্য কোনও সফটওয়্যার কিনতে হবে!না কি ফ্রিতেই আমাদের প্রয়োজনীয় সমস্ত কাজ করতে পারব।

ফ্রি এবং পেড দুই ধরনের সফটওয়্যারই এথন বর্তমানে রয়েছে। খুব বেশি তফাৎ তাদের মধ্যে নেই। ফ্রি সফটওয়্যার দিয়েই আপনারা আপনাদের প্রয়োজনীয় সমস্ত কাজই করতে পারবেন।আমি আপনাদের কিছু ফ্রি সফটওয়ার-এর নাম বলছি যার যাহায্যে আপনারা খুব সহজেই ইউনিকোড ফন্টে টাইপ করতে পারবেন।তবে একটা কথা মনে রাখবেন যে, ইউনিকোড সমস্ত আপডেট সফটওয়্যারকেই সাপোর্ট করে।বহু বছরের পুরনো সফটওয়্যার বা ভার্সানকে সাপোর্ট নাও করতে পারে, তাই ইউনিকোড ব্যবহার করার আগে নিজের ডিভাইসটিকে অবশ্যই আপডেট রাখবেন।

১.  কিম্যান বাংলা কিবোর্ড : কিম্যান একদম ফ্রি বাংলা কিবোর্ড প্রোভাইড করে। এই কিবোর্ড সম্পূর্ণভাবে ইউনিকোড সাপোর্ট করে। এই কিবোর্ডটি পরীক্ষিত এবং এই কিবোর্ডের সাহায্যে প্রফেশন্যাল জব আমরা করতে পারি।বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যারের ইউনিকোড ফন্টগুলো আমরা এই কিবোর্ডের সাহায্যে ব্যবহার করতে পারি।ব্যবহার করা সহজ এবং প্রায় সমস্ত এপ্লিকেশনকেই সাপোর্ট করে এই কিবোর্ড।



২.  উইন্ডোজ ডিফল্ট বাংলা কিবোর্ড : উইন্ডোজ লোড করার সাথে সাথেই এই কিবোর্ড আমাদের কম্পিউটারে ইন্সটল হয়ে যায়। তবে বাংলা টাইপ করার জন্য আলাদাভাবে সেটিং করে নিতে হয়। উইন্ডোজ সেভেন থেকে উইন্ডোজ ইলেভেন সমস্ত অপারেটিং সিস্টেমেই এই কিবোর্ড ইন্সটল থাকে। ল্যাঙ্গুয়েজ এ গিয়ে বাংলা কিবোর্ডটিকে অন করে নিতে হয়। বর্তমানে শুধুমাত্র ১টি জনপ্রিয় কিবোর্ড লেআউটই এখানে আছে।এই কিবোর্ডের সাহায্যেও আমরা প্রফেশন্যালভাবে বাংলা টাইপ করতে পারি।



৩.  শ্রীলীপি : শ্রীলিপি সারা ভারতবর্ষে খুবই জনপ্রিয় একটা সংস্থা। বিভিন্ন ভাষা নিয়ে এরা কাজ করে থাকে। এদের নিজস্ব অনেক ফন্ট আছে।ইউনিকোড ছাড়াও বর্তমানে যত বাংলা ফন্ট আছে, প্রায় সমস্ত ফন্টই শ্রীলীপি দিয়ে টাইপ করা যায়। প্রায় ৩০টির মতো কিবোর্ড লে-আউট আছে। এছাড়া নিজের ইচ্ছেমতো লে-আউট তৈরি করার সুযোগ এই সফটওয়্যারে আছে।একদম প্রফেশন্যাল একটি সফটওয়্যার। এটি একটি পেড সফটওয়্যার তবে একটু খুঁজলে এর ক্র্যাক ভার্সান-ও পেয়ে যেতে পারেন।বাংলা ছাড়াও অন্যান্য ভাষাও যেমন হিন্দী ও অন্যান্য ভাষাও টাইপ করতে পারবেন।প্রায় সমস্ত আপডেটেড এপ্লিকেশনে এটি ব্যবহার করা যায়। এখানে ফন্ট কনভার্টারের সুযোগ আছে। খুবই ভালো একটি সফটওয়্যার।



৪.  গুগুল কীবোর্ড : এটি একদম ফ্রি একটি সফটওয়্যার।এটি গুগুল ইনপুট টুল নামে পরিচিত। এই কিবোর্ডের সাহায্যে বাংলা ইউনিকোড ফন্ট সহজেই টাইপ করা যায়।বিভিন্ন ভাবে এই কিবোর্ড আমরা ব্যবহার করতে পারি। যেমন যদি ওয়েবসাইটে সরাসরি টাইপ করার ইচ্ছা হয় তাহলে সরাসরি গুগুল ইনপুট টুল লিখে ওয়েবসাইটে ঢুকে সেখানে বাংলা টাইপ করতে পারি।তবে প্রশ্ন হল যে, আমরা কি কোরেলড্র বা অন্যান্য সফটওয়্যারে গুগুল ইনপুট টুল ব্যবহার করতে পারি।হ্যাঁ পারি। মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে তো করতেই পারি এবং কোরেলড্র-তেও সহজেই এই টুলের সাহয্যে ইউনিকোড ফন্ট টাইপ করতে পারি। খুব মজার একটি লে-আউট এখানে আছে। যা সাহায্যে একদম নতুন শিক্ষার্থীরাও এখানে সহজে বাংলা টাইপ করতে পারে। সেটা হচ্ছে তোমরা ইংরাজিতে টাইপ অনুসারে টাইপ করতে সেটা বাংলাতে পড়বে। এখানে চাইলে পাশে তোমাকে সঠিক বানানের সাজেশনও দেবে। সত্যিই সুন্দর।



৫.  বিজয় বাহান্ন : বাংলাদেশে খুবই জনপ্রিয় একটি বাংলা টাইপিং সফটওয়্যার।এই সফটওয়্যারের নিজস্ব প্রচুর বাংলা ফন্ট আছে যার মধ্যে অনেক ফন্টই খুবই সুন্দর এবং প্রফেশন্যাল। ভারতবর্ষে এই বিজয় বাহান্নর প্রচুর ফন্ট আমরা ব্যবহার করে থাকি তবে সফটওয়্যারটির ব্যবহার একটু কম।

৬.  এসটিএম : বর্তমানে ভারতবর্ষে অত্যধিক জনপ্রিয় একটি সফটওয়্যার।এসটিএম-এর নিজস্ব প্রচুর ফন্ট আছে। ফন্টগুলি খুবই সুন্দর। এসটিএম-এর বিভিন্ন ভার্সান আছে। এদের নতুন যে ভার্সান এসটিএম 4.0 শুধুমা্ত্র সেখানেই ইউনিকোড এর সাপোর্ট আছে।একদম প্রফেশন্যাল একটি সফটওয়্যার। 2025 সালে এদের একটা নতুন ভার্সান অর্থাৎ 5.0 বেরোনোর কথা আছে। সেখানে ওরা আরও আপডেট নিয়ে আসবে।এটা একটা পেড সফটওয়্যার।



     এছাড়াও বর্তমানে ইউনিকোড টাইপ করার জন্য পারফেক্ট টাইপিস্ট, সৌমিলি ছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন কিবোর্ড বর্তমানে আছে। ইউনিকোড আমাদের ভবিষ্যৎ। তাই তোমাদের যে সফটওয়্যারটি ভালো মনে হবে সেটাতেই তোমাদের এগিয়ে যাও। তোমাদের অনেক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের প্রতিবেদনটি শেষ করছি। ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.